তোমাদের বাবারা বিদ্যালয়ের বাইরে বলেই প্রতারণা!

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার শাকরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চার ছাত্রী এক নারীর প্রতারণার শিকার হয়েছে। ওই নারী শিশু ছাত্রীদের কাছ থেকে সোনার তৈরি কানের দুল, গলার চেইন ও রূপার নূপুর নিয়ে গেছেন।

আজ সোমবার দুপুরে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গড়পাড়া ইউনিয়নে এ ঘটনাটি ঘটে। প্রতারণার শিকার চার ছাত্রী গড়পাড়া ইউনিয়নের আলীনগর গ্রাম ও পাঞ্জনখাড়া গ্রামের বাসিন্দা।

প্রতারণার শিকার ওই ছাত্রীরা জানায়, দুপুর ২টার দিকে টিফিনের সময় তারা বিদ্যালয়ের মাঠে গল্প করছিল। বোরকা পরা এক নারী বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে তাদের বলেন, তাদের বাবারা বিদ্যালয়ের বাইরে তাদের জন্য অপেক্ষা করছে। তাঁর এই কথা শুনে ছাত্রীরা বাবাদের সঙ্গে দেখা করতে ওই নারীর সঙ্গে বিদ্যালয় থেকে বাইরে যায়। ওই নারী তাদের বাইরে নিয়ে ঝালমুড়ি খাওয়ায়। এরপর সেখান থেকে হ্যালোবাইকে চ‌রি‌য়ে তাদের নিয়ে যায় চার কিলোমিটার দূরে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন জয়রা রোডের নূরজাহান ক্লিনিক এলাকায়। রাস্তায় চলাচ‌লের সময় চুরি হতে পারে এমন কথা বলে ওই নারী হ্যালোবাইকে যাওয়ার সময় ছাত্রীদের কাছ থেকে সোনার তৈরি কানের দুল, গলার চেইন ও রূপার নূপুর নিয়ে নেন।

প‌রে ব্যাংক থেকে টাকা তোলার কথা বলে হ্যলোবাইক থেকে নেমে ওই নারী ছাত্রীদের ওই ক্লিনিক এলাকায় রেখে চলে যান। অনেক সময় অতিবাহিত হলেও ওই নারী সেখানে না আসায় ছাত্রীরা কান্নাকাটি শুরু করে। ছাত্রীদের কান্নাকাটি দেখে ওই ক্লিনিকের এক নারী কর্মী এসে তাদের জিজ্ঞাসা করে এসব জানতে পারেন। পরে শিশুদের পরিবারকে জানানোর পর সেখান থেকে তাদের অভিভাবকরা এসে তাদের নিয়ে বিদ্যালয়ে যায়।

অভিভাবকরা এই ঘটনার জন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ী করেন। তারা অবিলম্বে ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

এ ব্যাপারে শাকরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইফফাত জাহান বলেন, বিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর অভিভাবককে তারা চেনেন না। এই কারণে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের প্রবেশের পর কোনো অভিভাবককে বিদ্যালয়ের ভেতরে ঢুকতে নিষেধ করা হয়েছিল। কিন্তু তারা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এই নিষেধাজ্ঞা মানেননি। যদি অভিভাবকরা ওই নিষেধাজ্ঞা মানতো তাহলে এই ঘটনা ঘটতো না বলে জানান প্রধান শিক্ষক।

মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রকিবুজ্জামান বলেন, এই ঘটনার পর বিদ্যালয়ে পুলিশ যায় এবং শাকরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন গড়পাড়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সিসি ক্যামেরায় ওই দৃশ্য দেখে। বোরকা ও মু‌খে স্কার্ফ পরা থাকায় ওই নারীর ছবি পরিষ্কারভাবে বোঝা যায়নি বলেও জানান তিনি।